Brahmarakshas: The Night That Haunts Us Forever
Brahmarakshas এর কথা গ্রামবাংলার বুকে লুকিয়ে থাকা গল্প আর কল্পনার জগতে আমরা সবাই কমবেশি শুনেছি। বে, বাস্তবে কেউ কখনো তার সামনে পড়েছে কি? এই প্রশ্নের উত্তর শুনতে গা শিউরে উঠতে পারে। আজ আমি শোনাতে যাচ্ছি আমার কাকুর জীবনের এক সত্য ঘটনা, যা তার শৈশবের গভীরে দাগ কেটে আছে। ভোরের আলো ফোটার আগে, গ্রামের বাগানে পাকা আম কুড়ানোর যে আনন্দ ছিল, তা কীভাবে এক রাতের মধ্যে বিভীষিকায় পরিণত হয়েছিল, সেই কাহিনি আজ আপনাদের শোনাব। প্রস্তুত তো? তাহলে চলুন, শুরু করা যাক এই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার যাত্রা।
ব্রহ্মরাক্ষস: এক রাতের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞত
এই গল্পটি শুধুমাত্র একটি ঘটনা নয়, এটি আমার বাবার ছোটবেলার সেই ভয়ঙ্কর রাতের স্মৃতি, যা শুনলে যে কারো গায়ের লোম খাড়া হয়ে যাবে।। গল্পটা তার ছোটবেলার, যখন তার বয়স ছিল মাত্র ১০ বছর। সেই সময় গ্রামে জুন মাসের গরমে আম কুড়ানোর একটা আলাদা উত্তেজনা ছিল। আমার বাবা, তার বড়দা আর বড়পিসি মিলে প্রায় প্রতি বছর গ্রামের বাগানে আম কুড়াতে যেতেন।
তবে এই ঘটনা ঘটেছিল এক রাতে, যা তাদের জীবনের স্মৃতিতে গভীর দাগ কেটে গেছে।
তাড়াতাড়ি পৌঁছানোর পরিকল্পনা
সেই রাতে বাবা, বড় জেঠু আর পিসি মিলে ঠিক করলেন, ভোর ৪টায় সবাই মিলে বাগানে যাবে, যাতে আগে গিয়ে সব পাকা আম তুলে আনতে পারে। বড় জেঠু বললেন আমি “চাঁদ দেখে সময় বুঝতে পারি। তোমাদের সময়মতো ডেকে নিয়ে যাব।”
সেইমতো সবাই ঘুমিয়ে পড়ল। রাতের গভীর নিস্তব্ধতায় বড় জেঠু এসে সবার ঘুম ভাঙালেন। সবাই ব্যাগ আর ঝোলা নিয়ে রওনা দিল। প্রথমে তারা ছোট বাগানে গেল, কিছু আম পেলেও মনের মতো পাকা আম তেমন পেল না। তখন বড় জেঠু বললেন, “বড় বাগানে চল।”
ভয়ঙ্কর বড় বাগান
“বড় বাগান” নামটা শুনে কাকু আর পিসির বুক ধড়ফড় করতে লাগল। দিনের বেলাতেও সেই বাগানে কেউ সহজে ঢোকার সাহস করত না। গ্রামের মানুষ বলত, সেখানে ব্রহ্মরাক্ষসের বাস। জায়গাটা এতটাই ভয়ানক ছিল যে অন্ধকার থাকত সর্বক্ষণ। বড় জেঠু সাহস দিলেন, “ভোরের সময় ভূত-প্রেত থাকে না। আমি আছি, ভয় পেয়ো না।” তারা সাহস করে বাগানে ঢুকল। বড় বড় গাছের ছায়ায় বাগানের ভেতর পাকা আম কুড়াতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল সবাই।
অশুভ আগমন
ঠিক তখনই পেছন থেকে ভারী পায়ের আওয়াজ শোনা গেল। সেই পায়ের আওয়াজ পাতা মাড়িয়ে আসছিল, আর ধীরে ধীরে তাদের দিকে এগিয়ে আসছিল। বড় জেঠু ফিসফিস করে বললেন, “পেছনে তাকাবে না। যা বলি তাই করো।”
তারা ভয় পেয়ে বাগানের মাঝখানে থাকা একটা পুরনো, ফাঁপা গাছের ভেতরে লুকিয়ে পড়ল। বাইরে তখন ভারী গহনার ঝমঝম শব্দ, সঙ্গে এক গর্জনের মতো আওয়াজ আসছিল।
Brahmarakshas এর দেখা
গাছের ফাঁক দিয়ে তারা দেখল এক দৈত্যাকৃতির অবয়ব। তার শরীর লম্বা লোমে ঢাকা, চোখ দুটো লাল, যেন আগুন জ্বলছে। গায়ে ছিল অদ্ভুত ধরনের পুরনো গহনা। সে এদিক-ওদিক তাকাচ্ছিল, যেন কাউকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।
বড় জেঠু ফিসফিস করে বললেন, “আম ছেড়ে দাও। দৌড়াও, কিন্তু পেছনে তাকাবে না।”
পলায়ন ও বাঁচার লড়াই
তারা প্রাণপণে দৌড়াতে শুরু করল। পেছনে পায়ের ভারী আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল। প্রায় বাগানের সীমানায় এসে তারা গ্রামের এক বৃদ্ধের বাড়িতে গিয়ে দরজায় কড়া নাড়ল। বৃদ্ধ কাকা দরজা খুলে ভেতরে নিয়ে গেলেন।
তারা ভয়ানক ঘটনাটা বলার চেষ্টা করতেই বৃদ্ধ থামিয়ে দিয়ে বললেন, “বাইরে বের হবে না। ওটা ব্রহ্মরাক্ষস। রাতের অন্ধকারে বের হওয়া বারণ। যে ভুল করেছে, সেই ওর দেখা পায়।”
বড় জেঠু বললেন, “কিন্তু ভোর ৪টা বাজে তো!” বৃদ্ধ কাকা চমকে বললেন, “৪টা নয়, এখন মাত্র ১টা ৩০। চাঁদের আলো দেখে ভুল করেছ।”
সারারাত তারা সেই বৃদ্ধের বাড়িতে কাটাল। ভোর ৫টা নাগাদ বৃদ্ধ কাকা তাদের বাড়ি পৌঁছে দিলেন। বাড়িতে গিয়ে পুরো ঘটনা জানালে তাদের খুব গাল মান্দ করা হোয়ে ছিল । গ্রামের মানুষ বলল, “তোমরা ভাগ্যবান যে বেঁচে ফিরেছ। ব্রহ্মরাক্ষস তার উপস্থিতি জানান দিতে এভাবেই আসে।”